বান্দরবানে সাঙ্গু নদীর ভাঙনে মধ্যমপাড়ায় দ্বিতল ভবনসহ সাতটি বসতবাড়ি পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে ফাটল দেখা দেয়ায় স্থানটি ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করে সরিয়ে নেয়া হলো দেড়শ পরিবারকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবান পৌরসভার চার নাম্বার ওয়ার্ডের মধ্যমপাড়ায় মারমা বাজারের আহম্মদ সওদাগরের গলির মাথায় অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফুলে ফেঁপে ওঠা সাঙ্গু নদীর পানি কমতে শুরু করায় তীরের অনেকস্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। নদীর মধ্যমপাড়া৷ উজানীপাড়া তীর ঘেঁষে রয়েছে অসংখ্য কাঁচা পাকা বাড়িঘর।
বন্যার পানি কমার সাথে সাথে পাকা ও কাঁচা বাড়িগুলোর নিচের বালিমাটি সরে গিয়ে ঘরগুলো ভেঙে পড়ে। এতে আহমেদ গলিসহ আশপাশের এলাকাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জায়গাটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাইকিং লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সানু বড়ুয়া ও রূপনা বড়ুয়া বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিকট শব্দে প্রথমে রেখা দাশের দ্বিতল পাকা বাড়ি ধসে পড়ে সাঙ্গু নদীতে। একটু পরই গীতা দাশসহ আমাদের আরও ছয় পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। এখানে অধিকাংশই গরীব মানুষ। নিজেদের জমি না থাকায় নদীর পাড়ে ঘর বানিয়ে বসবাস করি। ঘর বিলীন হওয়ায় যাওয়ার আর কোনো ঠিকানাও রইল না।
বান্দরবান পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর ফারুক বলেন, “মারমা বাজারের আহম্মদের গলিসহ আশপাশের পুরো এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পঞ্চাশের অধিক ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ধ্বসে পড়তে ফাটল ধরা ঘরবাড়িগুলো। সেখানে আরও শতাধিক পরিবার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এলাকাটি ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেনাবাহিনী-পুলিশের সহযোগিতায় প্রশাসন দেড়শ’ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পৌরসভার কোনো অনুমোদন ছাড়াই এসব ঘরবাড়িতে বসবাস করতেন নদীতীরের মানুষগুলো।”
জেলা প্রশাসনের এনডিসি আব্দুল আল মামুন জানান, নদী ভাঙনের স্থানটি ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে দেড় শতাধিক পরিবারকে। বন্যা ও নদী ভাঙনে যারা গৃহহারা হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।