চট্টগ্রাম নগরে আবারও দেখা দিয়েছে গ্যাস সংকট। এতে খাবার রান্না করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে গৃহিণীরা। এছাড়া হোটেল-রেস্টুরেন্টের লাইনের গ্যাসেও দেখা দিয়েছে একই সমস্যা। আর এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গ্যাস সিলিন্ডারের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের ক্ষোভ ঝারছেন ভুক্তভোগীরা।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) বলছে, এলএনজি টর্মিনালের সংস্কারকাজের কারণে সরবরাহ কমে গেছে। ফলে নগরীতে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। তবে দু-তিনদিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে।
কেজিডিসিএলের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে সার কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাসাবাড়ি মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই তুলনায় মিলছে ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট।
কেজিডিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) আমিনুর রহমান বলেন, ‘দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে চাহিদা মেটানো হয়। কিন্তু একটি এলএনজি টার্মিনালে সংস্কারকাজ চলমান থাকায় চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম পাওয়া যাচ্ছে।
তবে দু-তিনদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে গ্যাস সংকটে দুর্ভোগে পোহাতে থাকা লোকজন ক্ষোভ ঝাড়ছেন ফেসবুকে। বুধবার (৩ জানুয়ারি) ‘হেল্পলাইন চিটাগং’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে জসীম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি পোস্টে লেখেন, ‘১০৮০ টাকা গ্যাস বিল পরিশোধ করেও লাইনের গ্যাস পাচ্ছি না। সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে ১৫০০ টাকা দিয়ে, এই দুঃখের কথা কেউ কি শুনার আছে? কেউ কি এই সমস্যার সমাধান করবেন?’
তার এই পোস্টের নিচে প্রায় দেড় শতাধিক কমেন্ট করেছেন লোকজন। কমেন্টে খোরশেদুল ইসলাম নামের একজন লিখেন, ‘চট্টগ্রামে গ্যাস সমস্যা অনেকদিন যাবৎ লক্ষ্য করতেছি, সকালে চলে যায় বিকালে আসে, এই সমস্যা নিরসনে কারো মাথা ব্যথা নেই যত সমস্যা গ্রাহকের।’
তানজিনা ইয়াছমিন অপি লিখেছেন, ‘জি, তাই শেষ পর্যন্ত চুলা আর গ্যাস সিলেন্ডার কিনতে হল। পুরা আলফালাহ গলিতে নাই।’
রাজু আহমেদ নামের একজন কমেন্টের ঘরে লিখেন, ‘কালকে সকাল থেকে গ্যাস নাই, আল-ফালাহ গলিতে। শুনতেছি ২০ তারিখ (জানুয়ারি) পর্যন্ত নাকি এই সমস্যা থাকবে। সঠিক কয়দিন গ্যাস থাকবে না, সেটা কি কেউ জানেন??’
বিপুল দেব অভিক লিখেন, ‘উচিত জবাব টা এইবার না হয় ভোটের ময়দানে দিয়েন।’
‘এইসব নিয়ে কোথাও কোন আওয়াজ নাই’, কমেন্টের ঘরে অতনু দে মিশুক।
শাওরিন আকতার লিখেন, আগে সকাল ৮টায় যেত, দুপুর ৩টায় আসতো। আর এখন বাপের দিনের সম্পত্তি মনে করে একেবারেই গ্যাস নিয়ে গেছে আজ ২দিন। অনেক লজ্জা নিয়ে বলতে হয়, অনেক উন্নতি হয়েছে দেশের।’
খোরশেদ আলম লিখেছেন, ‘এসব বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। সবই পরিকল্পিত। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীদের সুবিধাকে মুখ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিশ্চয় সিলিন্ডার ব্যবহারে বাধ্য করা এদের ইচ্ছার প্রতিফলন।’
জুয়েল রানা লিখেছেন, একে তো দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ কষ্টে আছে, এখন আবার শুরু করছে গ্যাস নিয়ে, মনে আমাদের বাঁচতে দিবে না।’
মোহাম্মদ আশফাকুজ্জামান লিখেছেন, ‘গ্যাস ছাড়া রান্নার রেসিপি আসিতেছে।’